ঝালকাঠি প্রতিবেদক ॥ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল দিয়ে একটি সড়কের ওপর ঘর নির্মাণ করে সড়ক উন্নয়ন ঠেকানোর অপচেষ্টার প্রতিবাদ করায় মামলা দিয়ে প্রতিবাদকারীদের হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প ঠেকাতে মামলায় আসামি করা হয়েছে ঠিকাদারসহ ৭ জনকে। এতে ঠিকাদার পড়েছেন মহা বিপাকে। স্থানীয়রা তেঁতুলবাড়িয়া বাজার সংলগ্ন ওই জনগুরুত্বপূর্ণ খলিলুর রহমান সড়কের উন্নয়ন কাজ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের মো. ইউসুফ আলী হাওলাদার তার বাড়ির সম্মুখে খলিলুর রহমান সড়কের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এদিকে এ বছরের জানুয়ারি মাসে ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সড়কটির উন্নয়ন কাজ (কার্পেটিং) পায় মেসার্স মিলন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজটি কেনেন নলছিটির খাজুরিয়া গ্রামের ঠিকাদার আ. সালাম। ঠিকাদার আ. সালাম গত মে মাসে সড়কটির উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। স্
থানীয়রা জনস্বার্থে ওই সড়কের উন্নয়নের জন্য ইউসুফ আলীকে ঘরটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করেন। তিনি ঘরটি সরিয়ে না নিয়ে উল্টো ঠিকাদার আ. সালাম ও (স্থানীয় মো. খোকন, মো. আ. মন্নান, মো. মামুন হাওলাদার, মো. খলিল হাওলাদার, মো. বাশার সিকদার ও মো. মন্নান দফাদার) অপর ৬ জনের বিরুদ্ধে গত ৯ জুলাই নলছিটি থানায় একটি চুরি ও ভাঙচুর মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে উন্নয়ন কাজ ঠেকাতে ইউসুফ আলী ঝালকাঠি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা (এম.পি. কেস নং:- ১৭৪/২০০০(নল) দায়ের করেন। ওই আদালত রানাপাশা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা বিপ্লব দেবনাথের সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে এবং নথিপত্র বিবেচনা করে গত ১৭ আগস্ট মামলাটি খারিজ করে দেন।
(রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাদীর দখলীয় সম্পত্তির সম্মুখে একটি দোকান ঘর আছে। যার কোনো আইন সম্মত কাগজপত্র বাদী দেখাতে পারেননি। উক্ত সম্পত্তির ওপর দিয়ে সরকারের একটি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা সৃষ্টির জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থে মামলাটি আনায়ন করা হয়েছে। তাই মামলাটি খারিজ করা হল।) ভিকটিম (মামলার আসামি) মো.মামুন হাওলাদারসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ইউসুফ আলী অবৈধভাবে সরকারি সম্পত্তি দখল করে ঘর তুলে ব্যবসা করছেন। আমরা সড়ক উন্নয়নের জন্য তাকে ঘরটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করি। তিনি ঘরটি না সরিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা সাজাতে তার সেমিপাকা ঘরের দেয়ালের কিছু ইট ছুটিয়ে ঠিকাদারসহ আমাদের ৭ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পরপরই আবার তিনি ওই দেয়াল রাতারাতি গেঁথে ফেলেন। এতে আমরা শঙ্কিত রয়েছি এবং সড়কটির উন্নয়ন কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জনস্বার্থে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কটির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। ঠিকাদার আ. সালাম জানান, ঘরটি সরিয়ে বা ভেঙে নিচ্ছেন না দখলদার। এতে সড়কের উন্নয়ন কাজে বিঘœ ঘটছে ও ঘটবে। আমি বিপাকে পড়েছি। আমি তাকে ঘর সরিয়ে নিতেও বলিনি। স্থানীয়রা বলেছেন। তবুও অন্যায়ভাবে আমার বিরুদ্ধে ফৌজদারি একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে অভিযুক্ত মো. ইউসুফ আলী বলেন, আমি আমার সম্পত্তিতে ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করছি। আসামিরা গত ৭ জুলাই রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আমার দোকানঘর ভাঙচুর করে মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে। এ জন্য মামলা করেছি।
Leave a Reply